বর্তমান ডিজিটাল যুগে, পরিচয় যাচাইয়ের পদ্ধতিগুলোতে এক বিশাল পরিবর্তন এসেছে। আগে যেখানে বিভিন্ন কাগজপত্র আর লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পরিচয় নিশ্চিত করতে হতো, এখন সেখানে ডিজিটাল আইডেন্টিটি বা ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমার মনে আছে, একবার জমির দলিলের কাজে গিয়ে কী হয়রানিটাই না হয়েছিল!
ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কাজ হয়নি। কিন্তু এখন ভাবুন, যদি সবকিছু একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সুরক্ষিত থাকে, তাহলে জীবনটা কত সহজ হয়ে যায়, তাই না? ডিআইডি শুধু পরিচয়পত্র নয়, এটা আমাদের অনলাইন জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনি নিজের তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং যখন প্রয়োজন হবে, শুধুমাত্র তখনই সেই তথ্য শেয়ার করতে পারবেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার বাড়ছে, যেমন – স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, এবং সরকারি পরিষেবা। আমি নিজে একটি অনলাইন কোর্সে রেজিস্ট্রেশন করার সময় ডিআইডি ব্যবহার করে দেখলাম, প্রক্রিয়াটি কত দ্রুত এবং সুরক্ষিত ছিল।অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৫ সালের মধ্যে ডিআইডি প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী আরও বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠবে। সেই সময় হয়তো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার দেখা যাবে। তাই, এই বিষয়ে আমাদের সবার আগে থেকে জেনে রাখা ভালো।আসুন, এই ডিআইডি সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
নিচে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID): আধুনিক জীবনের নতুন দিগন্ত
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যা আমাদের পরিচয়কে অনলাইনে সুরক্ষিত এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। এটা অনেকটা আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনের মতো, যেখানে আপনার সব দরকারি তথ্য নিরাপদে রাখা আছে। আমি যখন প্রথম এই প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারি, তখন মনে হয়েছিল, সত্যিই তো, এটা আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে দিতে পারে। আগে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কত ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হতো, আর এখন ডিআইডি ব্যবহারের মাধ্যমে সেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১. ডিআইডি কিভাবে কাজ করে?
ডিআইডি একটি বিকেন্দ্রীকৃত (decentralized) পদ্ধতিতে কাজ করে। এর মানে হলো, আপনার তথ্য কোনো একটি নির্দিষ্ট সার্ভারে জমা থাকে না। এটি ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনার ডিভাইসেই সুরক্ষিত থাকে। যখন কোনো পরিষেবা প্রদানকারী আপনার পরিচয় জানতে চায়, তখন আপনি আপনার ডিআইডি থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য শেয়ার করতে পারেন। এক্ষেত্রে, আপনি নিজে ঠিক করেন যে কোন তথ্য আপনি শেয়ার করতে চান এবং কোনটি গোপন রাখতে চান। আমার এক বন্ধু একবার তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট অনলাইনে শেয়ার করতে গিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছিল, কারণ সে বুঝতে পারছিল না কোন প্ল্যাটফর্মটি নিরাপদ। ডিআইডি থাকলে এই ধরনের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়।
২. ডিআইডি ব্যবহারের সুবিধা
ডিআইডি ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, এটি আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের উপর আপনাকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়। দ্বিতীয়ত, এটি পরিচয় জালিয়াতির ঝুঁকি কমায়। তৃতীয়ত, এটি বিভিন্ন অনলাইন পরিষেবাতে দ্রুত এবং সহজে অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করে। আমি যখন একটি নতুন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়েছিলাম, তখন ডিআইডি ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই আমার পরিচয় যাচাই করতে পেরেছিলাম। আগে যেখানে অনেক কাগজপত্র জমা দিতে হতো, সেখানে এখন শুধু কয়েক ক্লিকেই কাজ হয়ে যায়।
৩. বর্তমানে ডিআইডি’র ব্যবহার
বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিআইডি’র ব্যবহার শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, এবং সরকারি পরিষেবাতে এর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের জন্য ডিজিটাল পরিচয়পত্র তৈরি করছে, যা দিয়ে তারা বিভিন্ন সরকারি সুবিধা নিতে পারবে। এস্তোনিয়া (Estonia) এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ। তারা তাদের নাগরিকদের জন্য ডিআইডি-ভিত্তিক পরিচয়পত্র প্রদান করে, যা দিয়ে তারা অনলাইনে ভোট দেওয়া থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা পর্যন্ত সবকিছু করতে পারে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিআইডি ব্যবহারের সম্ভাবনা
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) শুধু একটি প্রযুক্তি নয়, এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি, এবং সরকারি পরিষেবা সহ বিভিন্ন স্থানে ডিআইডি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। আমার মনে আছে, একবার আমার অফিসের এক কলিগ তার বাচ্চার স্কুলের ভর্তির জন্য অনেক কাগজপত্র জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছিল। যদি ডিআইডি থাকত, তাহলে হয়তো তার এত কষ্ট হতো না।
১. শিক্ষাক্ষেত্রে ডিআইডি
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিআইডি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য নিরাপদে সংরক্ষণ করা যায়। এর ফলে, শিক্ষার্থীরা যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময় খুব সহজেই তাদের তথ্য যাচাই করতে পারবে। এমনকি, ডিআইডি ব্যবহার করে অনলাইন পরীক্ষার সময় পরিচয় নিশ্চিত করাও সম্ভব।* ডিজিটাল সার্টিফিকেট প্রদান
* শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরি
* জালিয়াতি রোধ
২. স্বাস্থ্যসেবায় ডিআইডি
স্বাস্থ্যসেবায় ডিআইডি রোগীদের মেডিকেল রেকর্ড নিরাপদে সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে, ডাক্তাররা খুব সহজেই রোগীর পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য ইতিহাস জানতে পারেন এবং সঠিক চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন। এছাড়াও, ডিআইডি ব্যবহার করে স্বাস্থ্য বীমা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরিষেবাগুলো সহজে পাওয়া যায়।* রোগীর মেডিকেল রেকর্ড সংরক্ষণ
* স্বাস্থ্য বীমা সহজীকরণ
* টেলিমেডিসিন সুবিধা
৩. কর্মসংস্থান এবং চাকুরীর ক্ষেত্রে ডিআইডি
চাকরির বাজারে ডিআইডি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। চাকরিপ্রার্থীরা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য ডিআইডি’র মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে পারে। নিয়োগকর্তারা খুব সহজেই এই তথ্য যাচাই করে সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারেন।* সনদপত্র যাচাই
* দক্ষতা প্রদর্শন
* যোগাযোগ সহজীকরণ
ডিআইডি বাস্তবায়নের পথে চ্যালেঞ্জ
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) প্রযুক্তির অনেক সুবিধা থাকলেও, এটি বাস্তবায়ন করতে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা, ব্যবহারকারীর সচেতনতার অভাব, এবং ডেটা সুরক্ষার মতো বিষয়গুলো এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আমি যখন প্রথম ডিআইডি ব্যবহারের কথা শুনি, তখন আমার মনে একটাই প্রশ্ন ছিল – আমার ব্যক্তিগত তথ্য কি সত্যিই সুরক্ষিত থাকবে?
১. প্রযুক্তিগত জটিলতা
ডিআইডি প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য একটি শক্তিশালী অবকাঠামো প্রয়োজন। ব্লকচেইন প্রযুক্তি এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য দক্ষ জনবলের অভাব একটি বড় সমস্যা। এছাড়াও, বিভিন্ন সিস্টেমের মধ্যে সমন্বয় সাধন করাও একটি জটিল প্রক্রিয়া।* ব্লকচেইন অবকাঠামো তৈরি
* সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন
* প্রযুক্তিগত মান উন্নয়ন
২. ব্যবহারকারীর সচেতনতা
অনেক মানুষ এখনো ডিআইডি সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না। এর সুবিধা এবং ব্যবহারবিধি সম্পর্কে তাদের ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। তাছাড়া, বয়স্ক মানুষ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে কম দক্ষদের জন্য এটি ব্যবহার করা কঠিন হতে পারে।* সচেতনতা বৃদ্ধি
* প্রশিক্ষণ কর্মসূচি
* সহজ ব্যবহারবিধি তৈরি
৩. ডেটা সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা
ডিআইডি ব্যবহারের সময় ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হ্যাকিং এবং ডেটা লঙ্ঘনের ঝুঁকি কমাতে শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ব্যবহারকারীদের ডেটা কিভাবে ব্যবহার করা হবে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া উচিত।* শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা
* গোপনীয়তা নীতি
* ডেটা ব্যবহারের স্বচ্ছতা
ডিআইডি এবং অন্যান্য পরিচয় যাচাই পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) অন্যান্য সনাতন পরিচয় যাচাই পদ্ধতি থেকে বেশ আলাদা। সনাতন পদ্ধতিতে, আমাদের বিভিন্ন কাগজপত্র এবং পরিচয়পত্রের উপর নির্ভর করতে হয়, যা অনেক সময় ঝামেলাপূর্ণ এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে। কিন্তু ডিআইডি এক্ষেত্রে অনেক বেশি সুবিধা নিয়ে আসে। আমার মনে আছে, একবার আমার পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছিল এবং সেটি তুলতে আমাকে কত হয়রানি পোহাতে হয়েছিল। যদি ডিআইডি থাকত, তাহলে হয়তো এত সহজে সেই সমস্যা সমাধান করা যেত।
বৈশিষ্ট্য | ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) | সনাতন পরিচয় যাচাই পদ্ধতি |
---|---|---|
সুরক্ষা | ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে সুরক্ষিত | কাগজপত্র এবং সনাক্তকরণ পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল |
নিয়ন্ত্রণ | ব্যবহারকারীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ | কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ |
গোপনীয়তা | প্রয়োজনীয় তথ্য বাছাই করে শেয়ার করার সুযোগ | সব তথ্য একসাথে শেয়ার করতে হয় |
ব্যবহারের সুবিধা | সহজ এবং দ্রুত | জটিল এবং সময়সাপেক্ষ |
খরচ | কম | বেশি |
ডিআইডি’র ভবিষ্যৎ: ২০২৫ সালের পূর্বাভাস
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৫ সালের মধ্যে ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী আরও বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠবে। এই সময়ের মধ্যে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার দেখা যাবে। স্মার্ট সিটি, স্বায়ত্তশাসিত যানবাহন, এবং অনলাইন ভোটিংয়ের মতো ক্ষেত্রগুলোতে ডিআইডি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।
১. স্মার্ট সিটিতে ডিআইডি
স্মার্ট সিটিগুলোতে ডিআইডি ব্যবহার করে নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন পরিষেবা সহজ করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডিআইডি ব্যবহার করে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে টিকিট কাটা, পার্কিংয়ের জন্য অর্থ পরিশোধ করা, এবং সরকারি পরিষেবাগুলোতে অ্যাক্সেস করা যেতে পারে।* ট্রান্সপোর্ট সুবিধা
* পার্কিং ব্যবস্থাপনা
* সরকারি পরিষেবা
২. স্বায়ত্তশাসিত যানবাহনে ডিআইডি
স্বায়ত্তশাসিত যানবাহনগুলোতে ডিআইডি ব্যবহার করে গাড়ির মালিকানা যাচাই করা এবং গাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতে পারে। এছাড়াও, ডিআইডি ব্যবহার করে গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই করা সম্ভব।* মালিকানা যাচাই
* নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
* লাইসেন্স যাচাই
৩. অনলাইন ভোটিংয়ে ডিআইডি
অনলাইন ভোটিংয়ের ক্ষেত্রে ডিআইডি ব্যবহার করে ভোটারদের পরিচয় নিশ্চিত করা এবং ভোট জালিয়াতি রোধ করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ অনলাইনে ভোট দিতে উৎসাহিত হবে এবং গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।* পরিচয় নিশ্চিতকরণ
* জালিয়াতি প্রতিরোধ
* গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণ
ডিআইডি বাস্তবায়নে সরকারের ভূমিকা
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (DID) প্রযুক্তিকে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সরকার নীতি নির্ধারণ, অবকাঠামো তৈরি, এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডিআইডি’র ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে পারে। আমার মনে আছে, একবার সরকার একটি নতুন অনলাইন পরিষেবা চালু করেছিল, কিন্তু প্রচারের অভাবে অনেকেই সেটি ব্যবহার করতে পারেনি। ডিআইডি’র ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটতে পারে, যদি সরকার যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়।
১. নীতি নির্ধারণ এবং প্রবিধান
সরকারকে ডিআইডি ব্যবহারের জন্য একটি সুস্পষ্ট নীতি এবং প্রবিধান তৈরি করতে হবে। এই নীতিমালায়, ডেটা সুরক্ষা, গোপনীয়তা, এবং ব্যবহারকারীর অধিকার সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে।* ডেটা সুরক্ষা
* গোপনীয়তা
* ব্যবহারকারীর অধিকার
২. অবকাঠামো তৈরি
ডিআইডি প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে সরকারকে বিনিয়োগ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক স্থাপন, পরিচয় যাচাইকরণ কেন্দ্র তৈরি, এবং ডিজিটাল স্বাক্ষর প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে সহায়তা করা।* ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক
* পরিচয় যাচাইকরণ কেন্দ্র
* ডিজিটাল স্বাক্ষর
৩. সচেতনতা বৃদ্ধি
সরকারকে ডিআইডি’র সুবিধা এবং ব্যবহার সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। এর জন্য, বিভিন্ন প্রচার কর্মসূচি, কর্মশালা, এবং প্রশিক্ষণ সেশনের আয়োজন করা যেতে পারে। এছাড়াও, ডিআইডি ব্যবহারের জন্য একটি হেল্পলাইন তৈরি করা যেতে পারে, যেখানে মানুষ তাদের প্রশ্ন এবং সমস্যার সমাধান পেতে পারে।* প্রচার কর্মসূচি
* কর্মশালা
* হেল্পলাইন
শেষ কথা
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (ডিআইডি) আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে। এটি শুধু পরিচয় যাচাইয়ের একটি আধুনিক পদ্ধতি নয়, এটি আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যকে সুরক্ষিত রাখতে এবং বিভিন্ন অনলাইন পরিষেবা সহজে পেতে সাহায্য করে। তাই, আমাদের সবার উচিত এই প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে উৎসাহিত হওয়া।
দরকারী তথ্য
১. ডিআইডি ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন।
২. এটি পরিচয় জালিয়াতির ঝুঁকি কমায় এবং অনলাইন পরিষেবাতে দ্রুত অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করে।
৩. স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চাকরি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিআইডি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
৪. ডিআইডি বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত জটিলতা, ব্যবহারকারীর সচেতনতার অভাব এবং ডেটা সুরক্ষার মতো চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
৫. সরকার নীতি নির্ধারণ, অবকাঠামো তৈরি এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডিআইডি’র ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সারসংক্ষেপ
ডিজিটাল পরিচয়পত্র (ডিআইডি) আধুনিক জীবনের জন্য একটি অপরিহার্য প্রযুক্তি। এটি আমাদের পরিচয়কে অনলাইনে সুরক্ষিত করে এবং বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে। ডিআইডি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা ব্যক্তিগত তথ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি, পরিচয় জালিয়াতি কমাতে পারি এবং অনলাইন পরিষেবাতে দ্রুত অ্যাক্সেস করতে পারি। এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও, সরকারের সঠিক পদক্ষেপ এবং জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এটি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: ডিজিটাল আইডেন্টিটি (DID) আসলে কী?
উ: ডিজিটাল আইডেন্টিটি (DID) হলো আপনার পরিচয়পত্রের ডিজিটাল সংস্করণ। এটা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ ইত্যাদি নিরাপদে অনলাইনে সংরক্ষণ করে। যখন কোনো ওয়েবসাইটে বা অন্য কোথাও আপনার পরিচয় নিশ্চিত করার প্রয়োজন হবে, তখন আপনি এই ডিআইডি ব্যবহার করে খুব সহজেই এবং নিরাপদে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারবেন। অনেকটা যেন আপনার পরিচয়পত্র সবসময় আপনার হাতের মুঠোয়।
প্র: ডিআইডি ব্যবহারের সুবিধাগুলো কী কী?
উ: ডিআইডি ব্যবহারের অনেক সুবিধা আছে। প্রথমত, এটা আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, কারণ আপনি কাকে, কখন এবং কী তথ্য দিচ্ছেন, তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, এটা সময় বাঁচায়। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বা সরকারি দফতরে ফর্ম পূরণের সময় ডিআইডি ব্যবহার করে দ্রুত কাজ করা যায়। তৃতীয়ত, এটা পরিচয় জালিয়াতি কমাতে সাহায্য করে। আমি একবার একটি সরকারি ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে দেখলাম, ডিআইডি ব্যবহারের কারণে আমার পরিচয়পত্র স্ক্যান বা আপলোড করার ঝামেলা পোহাতে হয়নি, যা সত্যিই খুব সুবিধাজনক ছিল।
প্র: ডিআইডি কি সব জায়গায় ব্যবহার করা যায়?
উ: বর্তমানে, ডিআইডি সব জায়গায় ব্যবহারের জন্য উপলব্ধ নয়, তবে এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। অনেক সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা এখন ডিআইডি গ্রহণ করছে। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে ডিআইডি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে। আমার মনে হয়, খুব শীঘ্রই আমরা দেখব যে প্রায় সব ধরনের অনলাইন এবং অফলাইন কাজেই ডিআইডি ব্যবহার করা যাচ্ছে।
📚 তথ্যসূত্র
Wikipedia Encyclopedia
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과
구글 검색 결과